রাজধানীর রমনা ও পল্টন থানায় করা পৃথক ৯ মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদন গ্রহণ ও নিষ্পত্তি বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) অকার্যকর বলে খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।মির্জা ফখরুলের করা একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ওই মামলাগুলোতে জামিন আবেদন গ্রহণ করে আইনানুযায়ী তা নিষ্পত্তি করতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে (সিএমএম) নির্দেশ দেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। গত ২১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত বলেন, (মির্জা ফখরুল) জামিন আবেদন দাখিল করলে তা আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি করবে। একই সঙ্গে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য ১৫ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করেন। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষ নিয়মিত লিভ টু আপিল করে, যা আজ আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন। অন্যদিকে মির্জা ফখরুলের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান ও আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ৯ মামলায় জামিন আবেদন শুনানির জন্য নিম্ন আদালত গ্রহণ করছেন না—উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল রিটটি করেছিলেন। তাঁর জামিন আবেদন গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করে। লিভ টু আপিল শুনানির অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় নিম্ন আদালত ৯ মামলায় মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার দেখান। ৯ মামলায় তাঁকে জামিন দিয়েছেন নিম্ন আদালত। তাই রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল অকার্যকর বলে তা খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর রমনা ও পল্টন থানায় করা পৃথক ১০ মামলায় জামিন আবেদন গ্রহণ করে তা নিষ্পত্তির নির্দেশনা চেয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন মির্জা ফখরুল। রিটে দেখা যায়, ১০টির মধ্যে পল্টন থানার ৭টি এবং রমনা থানার ৩টি মামলার কথা উল্লেখ রয়েছে। মামলাগুলো ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে বিচারাধীন ছিল। এসব মামলায় তাঁর জামিন আবেদন করা হয়, যা গত ১২ ডিসেম্বর নিম্ন আদালত গ্রহণ করেননি। রিটের ওপর গত ১৮ ডিসেম্বর শুনানি হয়। সেদিন মির্জা ফখরুলের আইনজীবীরা জানান, দশটির মধ্যে ইতিমধ্যে পল্টন থানার এক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। শুনানি নিয়ে সেদিন হাইকোর্ট অপর নয়টি মামলার ক্ষেত্রে মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন গ্রহণ করে আইনানুযায়ী তা নিষ্পত্তি করতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে (সিএমএম) নির্দেশ দেন।