ক্যারিয়ারের এ পর্যায়ে এসে নতুন ভূমিকা ওপেনিংয়ে সফল না হতে পারলে কী হবে, তা নিয়ে ভাবছেন না স্টিভেন স্মিথ। সর্বশেষ অ্যাশেজেই ওপেনিং করার প্রসঙ্গ প্রথম তুলেছিলেন বলেও জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এ অধিনায়ক।
ডেভিড ওয়ার্নার অবসরে যাওয়ার পর ১৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যাডিলেড টেস্ট দিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ইনিংস উদ্বোধন করতে নামবেন ৩৪ বছর বয়সী স্মিথ। প্রথম শ্রেণিতেও এর আগে কখনোই ওপেন করেননি তিনি। অ্যাডিলেড ওভালে আজ নতুন বলে অনুশীলনও করেছেন তিনি, জানিয়েছে ইএসপিএনক্রিকইনফো।
এর আগে স্মিথ বলেছিলেন, মারনাস লাবুশেন ৩ নম্বরে খেলেন বলে তাঁকে ৪ নম্বরে ব্যাটিং করতে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়—যা তাঁর ভালো লাগে না। এমনিতে ক্রিকেট দেখতে খুব একটা পছন্দ করেন না তিনি, নিজে ব্যাটিংয়ে যাওয়ার আগে অন্যদের খেলা দেখা তো আরও নয়। শুধু নিজের একঘেয়েমি কাটবে, তা নয়, ইনিংস ওপেন করার ক্ষেত্রে কৌশলগত সুবিধাও দেখেন স্মিথ।
এর আগে ওয়ার্নার বলেছিলেন, সম্প্রতি স্মিথের বিপক্ষে শর্ট বল ব্যবহার করার যে কৌশল, তিনি ওপেনিংয়ে গেলে ইনিংসের শুরুতে নতুন বলে সেটি খুব একটা ব্যবহার করা হবে না। স্মিথও একমত সেটির সঙ্গে, ‘যদি নতুন বলে শর্ট করে অপচয় করেন আপনি, তাহলে তো ভালোই। নতুন বল স্কোরিং রেটেও কাজে লাগে, একটু বেশি আক্রমণ চলে।’
এরপর স্মিথ বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমি (ক্রিজে) এসেছি অনেক রান হয়ে যাওয়ার পর, তখন বল একটু নরম থাকে। কাভার এবং হয়তো লেগ সাইডে চারজন রাখা হয়, বোলাররা সোজা বোলিং করে, স্কোরবোর্ড আটকে রাখতে সমর্থ হয়। এটি আমাকে চুপচাপ থাকতে বাধ্য করেছে, রান করতে অনেক বল খেলতে হয়েছে। হয়তো নতুন বলে তা বদলাবে। একটু বেশি আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং থাকবে, ফলে রান করতে বেশি গ্যাপ থাকবে। তর সইছে না আমার।’
ইনিংস উদ্বোধনের এই ভাবনা গত অ্যাশেজেই এসেছিল স্মিথের মাথায়। গত মাসে আবারও এ প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন তিনি। তবে সিডনি টেস্টের আগে তাঁর কথা সেভাবে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়নি বলেও জানিয়েছেন স্মিথ, ‘আমি কয়েক সপ্তাহ ধরেই এটি বলার চেষ্টা করছি, এমনকি আমার তো মনে হয় পার্থের (টেস্ট) আগে থেকেই। ইংল্যান্ডেও হুট করে এটি বলে থাকতে পারি, আমি ওপরে উঠব, ওপরে খেলতে আপত্তি নেই। পার্থের পর আমি বলেছি, ডেভি চলে যাওয়ার পর ওপরে যেতে আমি আগ্রহী।’
তবে স্মিথের কথা সেভাবে পাত্তা দেওয়া হয়নি এর আগে, ‘আমার মনে হয় না সিডনির আগে তারা আমার কথাকে গুরুত্ব দিয়েছে। এরপর আমি বলেছি, আমি কিন্তু সত্যিই বলছি। ওপরে যেতে, নতুন বল খেলতে আগ্রহী আমি। এরপর তারা বলেছে, “আচ্ছা, ঠিক আছে, বিবেচনা করব, দেখা যাক
ক্যারিয়ারের এ পর্যায়ে এসে নতুন একটি পজিশনে ব্যাটিংয়ের চ্যালেঞ্জ তো আছেই, ঝুঁকিও আছে। এমনিতে নতুন বলে স্মিথের রেকর্ড বেশ ভালো। প্রথম দুই ওভারের মধ্যে তিনি যতবার ক্রিজে গেছেন, সে সব ইনিংসে তাঁর গড় ১০৬.২। তবে স্মিথ ওপরে উঠে যাওয়াতে ৪ নম্বরে ফেরানো হয়েছে ক্যামেরন গ্রিনকে। মিচেল মার্শের সাম্প্রতিক ফর্মের কারণে অলরাউন্ডার গ্রিন একাদশের বাইরেই চলে গিয়েছিলেন। স্মিথ যদি ওপেনিংয়ে সুবিধা করতে না পারেন এবং গ্রিন চারে সফল হন, সেক্ষেত্রে কী হবে—এমন প্রশ্নও আসে তাই।
তবে স্মিথ এভাবে ভাবতেই চান না, ‘আমি কোনো নেতিবাচক ভাবনা চাই না। আমি নিশ্চিত নই। কেউ যদি মিডল অর্ডারে চোট পায় এবং (পাইপলাইনে) পরবর্তী ব্যাটসম্যান স্বীকৃত ওপেনার হয়, তাহলে হয়তো তারা তাকে ওপেনিংয়ে খেলাবে, আমি নিচে নেমে যাব। আমি এর উত্তর জানি না। তবে এ মুহূর্তে আমাদের সেরা ছয় ব্যাটসম্যান খেলছে বলেই বিশ্বাস আমার।’
ওয়ার্নার যাওয়ার পর গ্রিনকে ইনিংস ওপেন করতে পাঠানো হতে পারে, এমন আলোচনাও ছিল। সেটি ন্যায্য হতো না বলেও মনে করেন স্মিথ, ‘সে ফিরেই শুরুর দিকে ব্যাটিং করবে, এটি ঠিক মনে হচ্ছিল না। আমি অনেক দিন খেলেছি, আমি অভিজ্ঞ। মনে হয়েছে আমারই এটি করা উচিত। ৪ নম্বরেই তার (গ্রিনের) ব্যাটিং উপযুক্ত, শিল্ড ক্রিকেটেও সেটিই করে, ভালোও করে।’